বিশ্ব রাজনীতি

ট্রাম্পের প্রার্থীকে গোহারা হারিয়ে নেহরুর ১৫ অগস্টের বক্তৃতা মামদানির মুখে!

প্রকাশ: 5 November, 2025 • 0 বার পঠিত

ট্রাম্পের প্রার্থীকে গোহারা হারিয়ে নেহরুর ১৫ অগস্টের বক্তৃতা মামদানির মুখে!
ভারত স্বাধীনতা লাভের পরে মধ্যরাতে প্রথম যে ভাষণ দিয়েছিলেন নেহেরু, নিউ ইয়র্কে জয়ের পর তার প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছে মামদানির মুখেও। সেই সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনকে তিনি খোঁচা দিতেও ছাড়েননি।
নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে হারিয়ে দিয়েছেন ডেমোক্র্যাট শিবিরের ভারতীয় বংশোদ্ভূত জ়োহরান মামদানি। জয়ের পর তিনি স্মরণ করেছেন স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর বাণী। ভারত স্বাধীনতা লাভের পরে মধ্যরাতে প্রথম যে ভাষণ দিয়েছিলেন নেহেরু, তার প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছে মামদানির মুখেও। সেই সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনকে তিনি খোঁচা দিতে ছাড়েননি।
মামদানি বলেছেন, ‘‘আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আজ আমার জওহরলাল নেহরুর কথাগুলি মনে পড়ছে। ঐতিহাসে এই মুহূর্ত বিরল। আমরা পুরাতন থেকে নতুনের দিকে পা বাড়ালাম। একটা যুগ শেষ হল, দীর্ঘ দিন ধরে চেপে রাখা একটা জাতির আত্মা নতুন ভাষা খুঁজে পেল।’’ ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট ভারতের স্বাধীনতা লাভের পর নেহরুও এই কথাগুলি বলেছিলেন। নিউ ইয়র্কে নতুন দিনের সূচনা হতে চলেছে, দাবি মামদানির। পূর্বতন প্রশাসনকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এটা এমন একটা যুগ হবে, যেখানে নিউ ইয়র্কবাসী নেতৃত্বের কাছ থেকে প্রাপ্তির আশা করতে পারবেন। যা আমরা করতে ভয় পাই, তার জন্য অজুহাতের তালিকা খাড়া করব না, যা এত দিন হয়ে এসেছে।’’
ট্রাম্পের প্রার্থীর শোচনীয় হার নিউ ইয়র্কের মেয়র ভোটে, ১০% ভোটও জুটল না! ভার্জিনিয়া ও নিউ জার্সিতেও হারল তাঁর দল
রিপাবলিকান পার্টির হয়ে নিউ ইয়র্কের মেয়র ভোটে লড়ছিলেন কুর্টিস স্লিওয়া। তাঁকে দাঁত ফোটানোর সুযোগও দেননি মামদানি। নিজে পেয়েছেন ৫০ শতাংশের বেশি ভোট। রিপাবলিকান প্রার্থী ১০ শতাংশ ভোটও পাননি (৭.১ শতাংশ)। নিউ ইয়র্কের ভোটের লড়াইয়ে শুরু থেকেই ছিটকে গিয়েছিলেন স্লিওয়া। লড়াই হয় দুই ডেমোক্র্যাট নেতার মধ্যে। মামদানি ছাড়াও মেয়র হওয়ার লড়াইয়ে ছিলেন ডেমোক্র্যাট নেতা অ্যান্ড্রু কুয়োমো। তিনি নিউ ইয়র্ক প্রদেশের প্রাক্তন গভর্নর। এ বারের নিউ ইয়র্কের মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রাইমারিতে (যেখানে একই দলের দুই বা তার বেশি প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে লড়াই হয়) মামদানির কাছে পরাজিত হন তিনি। পরে নির্দল প্রার্থী হয়ে মেয়র পদের জন্য লড়াই করেন। তিনি পেয়েছেন ৪১.৬ শতাংশ ভোট।
নিউ ইয়র্কের অন্যতম প্রধান সমস্যা জীবনযাত্রার ব্যয় সঙ্কটের কথাও জয়ের পর শোনা গিয়েছে মামদানির মুখে। জানিয়েছেন, তাঁর প্রশাসন এই সমস্যার সমাধানকেই অগ্রাধিকার দেবে। মামদানির কথায়, ‘‘আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির কেন্দ্রে থাকবে এই শহরের জীবনযাত্রার ব্যয় সঙ্কট সামাল দেওয়ার অ্যাজেন্ডা। উচ্চ অভিলাষ নিয়ে আমরা সে দিকে এগোব।’’
আমেরিকার রাজনীতিতে বামঘেঁষা ডেমোক্র্যাট বলে পরিচিত মামদানি। আফ্রিকা মহাদেশের উগান্ডায় জন্ম হলেও তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তিনি ভারতীয় চিত্রপরিচালক মীরা নায়ারের পুত্র। তাঁর পিতা উগান্ডার খ্যাতনামী লেখক মাহমুদ মামদানি। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই ডেমোক্র্যাট নেতাকে প্রথম থেকেই নিশানা করছিলেন ট্রাম্প। ধারাবাহিক ভাবে মামদানির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন খোদ প্রেসিডেন্ট। এমনকি, তাঁকে ‘১০০ শতাংশ উন্মাদ কমিউনিস্ট’ বলেও ডেকেছিলেন। তবে ট্রাম্পের বিরোধিতায় লাভ হল না। সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েই নিউ ইয়র্কের প্রশাসনের শীর্ষ বসতে চলেছেন মামদানি।

শেয়ার করুন